প্রকাশিত: ১৫/০২/২০১৮ ৮:৩০ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৬:৩৫ এএম
বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা

উখিয়া নিউজ ডটকম::
নানা নির্যাতনের অজুহাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা বাংলাদেশে সাময়িক আশ্রিত রোহিঙ্গাদের কাছে প্রত্যাবাসনের কোন খবর নেই। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু না হওয়ায় খুশিতে আছে লাখ -লাখ রোহিঙ্গা। প্রতিদিন শেকড় গজাচ্ছে হাজার হাজার রোহিঙ্গার। রোহিঙ্গা নারীরা গর্ভবর্তী হয়ে পড়ছে প্রতিনিয়ত। বাংলাদেশের ভূ-খন্ডে রাতদিন সন্তান প্রসব করছে। স্বদেশ মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবছে না তারা এখন। বিদেশীদের মদদপুষ্টে বাংলাদেশের মাটিতে আজীবন থাকার স্বপ্ন দেখছে এরা। সচেতন ও বিজ্ঞ মহল মনে করছেন ১০ লাখ রোহিঙ্গার মাঝে জঙ্গি তৎপরতা আর্বিভাব হচ্ছে কি ? প্রত্যাবাসনকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গারা স্থানীয়দের সাথে মোকাবেলা এবং প্রশাসনের সাথে বড় ধরণের সংঘাতে জড়াতে পারে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন উখিয়া-টেকনাফের স্থানীয় মানুষ।সরকারের নজরদারী সংস্থার রিপোর্টে জঙ্গি তৎপরতার উদ্ভব হবে কিনা তা এখনো উঠে আসেনি বলে মনে করেন অনেকেই। রোহিঙ্গারা গত ৫ মাসে বড় ধরণের অঘটন সৃষ্টি না করলেও যে কোন সময় তারা স্থানীয়দের সাথে শক্তির মহড়া দেখাতে পারে। রোহিঙ্গাদের মুখে পুরো কক্সবাজার থেকে ফেনী পর্যন্ত আরাকান স্বাধীনতা পাওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। ক্যাম্প গুলোতে অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানী আছে প্রতিদিন। আসার সময় তারা নিয়ে আসতে পারে বিস্ফোরকসহ ভারী অস্ত্র। রোহিঙ্গারা অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য এনে থাকলে কি হবে স্থানীয় মানুষের। স্থানীয়দের উপর অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার পূর্বের রেকর্ড রোহিঙ্গাদের আছে। প্রশাসনকে তারা অবৈধ অস্ত্র দিয়ে বার- বার পরাহত করতে চেয়েছিল।উল্লেখ্য ২০১৬ সালের ১৩ মে টেকনাফের নয়াপাড়া রেজি: রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আনসার ব্যারাকে হামলা চালিয়ে ১১টি অস্ত্র ও বিপুলসংখ্যক গুলি লুট করে নিয়ে যায়। ওই সময় তাদের গুলিতে মো. আলী হোসেন (৫৫) আনসার কমান্ডার নিহত হয়। এছাড়াও কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ম্যাজিষ্ট্রেটের উপর হামলার ঘটনা ঘটায়। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বনের রাজা খ্যাত ইউনুছ ডাকাতের গুলিতে কুতুপালং গ্রামের নিরীহ গ্রামবাসী আলী চাঁন নিহত হয়।এদিকে ২০১৭ সালের ৯ জুলাই টেকনাফের মুচনী নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠন সলিডারিটি অর্গানাইজেশন অব রোহিঙ্গা’র (আরএসও ) সদস্য দোস মোহাম্মদকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে স্থানীয় জনগণের আস্থার অভাব। এরা কোন সময়ই স্থানীয় ও প্রশাসনের কাতারে সভ্যতার পরিচয় দিতে পারেনি। আগামীতে কি হতে পারে বিশাল এ রোহিঙ্গা গোষ্টিকে নিয়ে। সরকারের কাছেও হয়ত: রোহিঙ্গারা একদিন বিষ ফোড়া হতে পারে। রোহিঙ্গাদের নিয়ে সরকার এখনই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নিলে তারা বাংলাদেশকেও হুমকি দিতে পারে। এ বিষয় মাথায় রেখে সাবধান থাকতে হবে বাংলাদেশকে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নানা অপতৎপরতা থেমে নেই এমন কথা মানুষের মুখে-মুখে। সরকারের পক্ষ থেকে জঙ্গী তৎপরতাকে বিনষ্ট করে দিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চালাতে হবে চিরুণী অভিযান। যাতে সরকারকে কোন সময় বিপদে পড়তে না হয়।এদিকে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বারবার বাঁধাগ্রস্থ হওয়ায় কি বুঝাতে চাচ্ছে রোহিঙ্গাদের নিয়ে আন্তর্জাতিক মহল, তা নিয়েও ভাবতে হবে। যারা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত তাদের কাছে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে তথ্যভান্ডার থাকা দরকার। অন্যথায় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সূদুর পরাহত হবে। এ থেকে উত্তরণের জন্য সরকারকে কঠোর হয়ে কাজ করতে হবে।বর্তমানে রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের উখিয়ার বন বিভাগের প্রায় ৫ সহস্রাধিক একর বনভূমিতে অবস্থান করছে। তারা ধ্বংস করছে গহীণ অরণ্য, পাহাড় পর্বত। বিদেশী এনজিওদের খেয়ে খুশিতে আনন্দে দিন দিন কাটাচ্ছে রোহিঙ্গারা। মনে হয় এরা রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশ ভ্রমণে আছে।কবে স্বদেশে ফিরে যাবে রোহিঙ্গাদের কাছে এমন প্রশ্ন করলে বালুখালী-১ অসংখ্য রোহিঙ্গা কেন যাবো মিয়ানমারে উল্টো প্রশ্ন তুলে। কুতুপালং ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা দম্ভের সাথে বলেন, তারা বাংলাদেশের খায়ও না, পরেও না। বিদেশী দাতা সংস্থা তাদের খাওয়াচ্ছে। কয়েকজন রোহিঙ্গা নাম প্রকাশ না করার কথা বলে জানান, বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের নিয়ে লাভে আছে। আমরা থাকলে সরকার খুশি। আপনারা আমাদের বিরুদ্ধে লেখেন কেন ? এসব উদ্ভট প্রশ্ন করেন রোহিঙ্গারা।রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জঙ্গি তৎপরতার সম্ভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আবুল খায়ের বলেছেন, “রোহিঙ্গারা শুধু স্থানীয়দের জন্য হুমকি নয়, সরকারের জন্যও তারা বিষফোড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোহিঙ্গারা এদেশে বোঝা হয়ে দাড়িয়েছে।প্রতিদিন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা অবনতির ঘটনা ঘটছে। এদের কর্মকান্ড দেখলে মনে হয় তারা দিন দিন হিংস্র হয়ে উঠছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জঙ্গি উত্থান হবে না একথা বলা যাবে না। তাই এদের সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার। অন্যথায় সবার জন্য বিপদ ভয়ে আনতে পারে।”এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ ও উপ-সচিব মো: রেজাউল করিম বলেন, রেজি: ক্যাম্পের কিছু রোহিঙ্গা আগেই থেকে অপরাধপ্রবণ কর্মকান্ডে জড়িত ছিল। ২৫ আগষ্ট পরবর্তী নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের সাথে মিশে তারা অপরাধ কর্মকান্ডে জড়াচ্ছে। এছাড়া তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল থেকেও অনেক সময় নানা অপরাধ কর্মকান্ডসহ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক ৫টি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে উখিয়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এনজিও’র কারণে রোহিঙ্গারা বেপরোয়া হয়ে গেছে। বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়াচ্ছে। গভীর রাতেও রোহিঙ্গারা হাটবাজারে অবাধ চলাফেরা করে।রাত-বিরাতে গ্রামের মহল্লায় ঢুকে অবাধ চলাচল করে থাকে।তাতে স্থানীয়রা আতংকে রয়েছে।রোহিঙ্গারা যে কোন সময় স্থানীয়দের উপর হামলে পড়তে পারে। বেড়েছে গেছে চুরি,ডাকাতি,ছিনতাই সহ বহুমুখী অপরাধ। এনজিওরা এদের লেলিয়ে দিয়ে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটাতে পারে। নামী-দামী হোটেলে রোহিঙ্গাদের চাকরি দিয়েছে এনজিওরা। তিনি আরো বলেন, সংকট উত্তরণের পথ হচ্ছে সরকার পরিচালিত এনজিও হতে হবে এবং সরকার পরিচালিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প ব্যবস্থা চালু করতে হবে। রোহিঙ্গারা হচ্ছে রিফিউজি, এদের চালাচ্ছে ইহুদী। যার কারণে ধর্মের উপর আঘাত আসছে। বিভিন্ন এনজিও রোহিঙ্গাদের খৃষ্টান বানাচ্ছে। তাতে ইহুদীবাদের আস্কারায় রোহিঙ্গারা দিন-দিন হিংস্র হয়ে ওঠেছে। রোহিঙ্গারা ১৯৪২ সাল থেকে ঐতিহাসিকভাবে বেঈমান জাতি হিসেবে পরিচিত। বাংলার ভুখন্ড রক্ষায় সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবী উত্তাপন হচ্চে নানা সভা- সমাবেশ,মিছিলে।

পাঠকের মতামত

সিভিল সার্জন কার্যালয়ে স্বাস্থ্য সহকারী পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে গিয়ে আটক ১

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ে স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় প্রক্সি দিয়ে উত্তীর্ণ হলেও মৌখিকে ধরা ...

গহীন পাহাড়ে কঠোর প্রশিক্ষণ, যা বললেন কুকি চিনের আকিম বম

বান্দরবানে পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠন কুকি–চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সামরিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নারী শাখার বান্দরবান সদর ও ...

নাইক্ষ‌্যংছড়ি উপজেলা নির্বাচন বর্জনে জেলা বিএনপির লিফলেট বিতরণ

বান্দরবান জেলার আসন্ন নাইক্ষ‌্যংছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জনে বান্দরবান জেলা বিএনপির দিনব‌্যাপি লিফলেট বিতরণ করা ...

নাইক্ষ‍্যংছড়ির গহিন অরণ্যে অভিযান, ৮টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিপুল সরঞ্জাম উদ্ধার

বান্দরবানের নাইক্ষ‍্যংছড়ির গহিন অরণ্যে দুর্বৃত্তদের আস্তানায় হানা দিয়ে ৮টি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিপুল অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম ...